শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বাড়ছে ডলারের দাম

আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০১৯, ২০:৩৩

খোলাবাজারে হঠাত্ বেড়েছে মার্কিন ডলারের দর। গত কয়েক দিন ধরে অল্প অল্প করে বাড়ছিল। কিন্তু গতকাল ব্যাংকগুলোতেও ডলারের দর বেড়েছে। ফলে আমদানির জন্য বাড়তি মূল্যে এলসি খুলতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোতে প্রতি ডলার সর্বনিম্ন ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে খোলাবাজারে মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে ৮৬ টাকা ছাড়িয়েছে প্রতি ডলার। দুই সপ্তাহ আগে খোলাবাজারে প্রতি ডলারের দাম ছিল সাড়ে ৮৫ টাকা। আর ব্যাংকে ছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে হঠাত্ অভিযান বিশেষত, কয়েক জায়গা থেকে নগদ টাকা আটক এবং ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের গুজবের প্রভাবে ডলারের চাহিদা বেড়ে দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক নোট বাতিলের সম্ভাবনা নাকচ করে বিষয়টি গুজব বলে জানিয়েছে। বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে নোট বাতিলের বিষয়টিকে গুজন বলা হয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে আমদানি-রপ্তানিতে ডলারের দর বেশ কিছু দিন ধরে ৮৪ টাকা ৫০ পয়সায় অপরিবর্তিত ছিল। তবে ব্যাংকে ক্যাশ বা নগদ ডলারের দর গত কয়েক দিনে বেড়ে ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন কারণে নগদ ডলারের চাহিদা খোলাবাজারের পাশাপাশি ব্যাংকেও বেড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেউ কেউ হাতে থাকা নগদ টাকা দিয়ে ডলার কিনে রাখছেন। অনেকে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারে নতুনভাবে যুক্ত হতে পারেন। তবে হঠাত্ করেই নগদ ডলারের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কম। এ কারণে ডলারের দর বেড়েছে। আবার দেশের বাইরে থেকে আসা নগদ ডলারের সরবরাহও কমে গেছে। দেশে যে নগদ ডলার রয়েছে, তার বড়ো অংশই বিদেশিদের ভ্রমণের সময় সঙ্গে আনা কিংবা প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার সময় সঙ্গে নিয়ে আসা। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও অনেক সময় দেশে এসে ফেরার সময় আত্মীয়স্বজনকে নগদ ডলার দিয়ে যান। আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, বিদেশি ঋণসহ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের অর্থ ক্যাশ হিসেবে দেশে আসে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে এ ধরনের লেনদেন হয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ার কারণে আমদানি করা সব ধরনের পণ্য, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে। তবে ডলারের দর বাড়লে রপ্তানিতে কিছু সুবিধা মিললেও আমদানি পণ্যের দাম বাড়বে। কারণ দেশে রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি হয়।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদার তুলনায় ডলারের সরবরাহ কম থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাপে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার। ডলারের দর বাড়লে রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারীরা খুশি হলেও খরচ বাড়ে আমদানিতে। আমদানি খরচ বাড়লে তার প্রভাব পড়ে ভোক্তা পর্যায়ে। বেশি দামে পণ্য কেনার প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে অন্য ব্যাংক থেকে ডলার কিনে আমদানি দায় পরিশোধ করতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেক সময় আমদানিকারকের চাহিদা অনুযায়ী ডলার সরবরাহ করতে না পেরে গ্রাহক হারানোর ঘটনা ঘটে।