শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ডিএনডির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রধান বাধা অপরিকল্পিত নগরায়ণ

আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:১২

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ। এ কারণে ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজে গতি আসছে না। ফলে এখনো জলাবদ্ধতার সমস্যা মোকাবিলা করছেন ডিএনডির ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যে কয়টি সমস?্যা চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে অপরিকল্পিত নগরায়ণের বিষয়টিই প্রধান হয়ে উঠে এসেছে।

সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বিষয়টি এরই মধ্যে প্রধান তদারকি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। প্রকল্পটি যখন হাতে নেওয়া হয়, তখন প্রকল্পের ডিপিপির ওপর পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায় বলা হয়েছিল, প্রকল্প এলাকাটি ঢাকার শহরের কাছে হওয়ায় স্বাধীনতার পর এখানে দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণ হয়। ডিএনডি এলাকায় ভূমি ব্যবহারে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়।

কৃষি জমিগুলো বাসভবন, শিল্পপ্লট কিংবা রাস্তায় রূপান্তরিত হয়। গুরুত্বপূর্ণ খাল, ড্রেন ইত্যাদি স্থানীয় মানুষের নিক্ষিপ্ত বর্জ্যে অচল হয়ে যায়। পাশাপাশি বিদ্যমান পাম্পগুলো বন্যার পানি ও গৃহস্থালির বর্জ্য পানি নিষ্কাশনে অসমর্থ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া অবৈধ দখলের কারণে নিষ্কাশন খালগুলোর ধারণক্ষমতাও কমে যায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এসব সমস্যা এখন দৃশ্যমান হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অপরিকল্পিত বাসভবন ও শিল্পপ্লট, দখল হওয়া খাল এবং অনুমোদনের চেয়ে সরু ড্রেন পাওয়া গেছে। যেগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া কিছু উল্লেখযোগ্য সমস্যার মধ্যে রয়েছে, পানি নিষ্কাশনের বিভিন্ন স্থানে পাকা রাস্তা নির্মাণ ও খাল দখল। এর মধ্যে একটি খালের জমিতে অবৈধভাবে ছয়তলা বাড়িও পেয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামত সাপেক্ষে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণাল সভায় বসতে যাচ্ছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মাহমুদুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং সার্বিক বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগ পোহায় ডিএনডির ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। বছরের প্রায় ৫ মাস জলাবদ্ধতার মধ্যেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহায় ডিএনডিবাসী। এমন পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট একনেক সভায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) সেচ প্রকল্প এলাকায় নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৫৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ডিএনডি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন (ফেইজ-২)’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদিত হয়। ২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর ডিএনডি এলাকার পানি নিষ্কাশনের উন্নয়নে সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে।