শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হোক দিন বদলের শুরু

আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:৩৫

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারীর অবদান এখন শুধু ঘরের কাজেই নয়, বাইরেও তারা 

নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে নিত্যদিন অংশগ্রহণ করে আর্থিক সচ্ছলতার পাশাপাশি নিয়ে আসছেন জীবনব্যবস্থার

পরিবর্তন। এমনই কয়েকজনের গল্প তুলে ধরেছেন— ইফফাত ই ফারিয়া

তাসনিম সুলতানা

 

আট বছর বয়সে ধরা পড়া এপিলেপ্সি রোগের কারণে দশম শ্রেণির পর আর পড়ালেখা হয়নি। তবে পড়াশোনা না করলেও হাত গুটিয়ে কখনো বসে ছিলেন  না এই তরুণী। অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি নিয়ে ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল দেসিও এর যাত্রা শুরু হয়।খুঁজে খুঁজে ডিলারদের বের করে, বাছাইকৃত পণ্য নিয়ে একা হাতে প্যাকিং,কাপড় ডেলিভারি এবং কাস্টমার সামলানো আসলে বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়। নিজের অসুস্থতা, আর্থিক সমস্যা  এবং বাবাবিহীন পরিবারের একলা চলার যে কষ্ট, এসব প্রতিকূলতাই তাকে আরো  দৃঢ় করে। নিজেই  হোলসেলার হয়ে পোশাক ও প্রসাধনী সামগ্রীর এক প্ল্যাটফরম তৈরি করে আরো মেয়ের কর্মসংস্থান করতে চান। এখনো যারা এগিয়ে আসতে দ্বিধা করছেন সেসব নারী উদ্যোক্তাদের জন্য তিনি বলতে চান, ‘নিজের গুণগুলোর চর্চা করুন, আত্মবিশ্বাস ও সাহস রাখুন। যদি আমি এই টুকু আসতে পারি , তাহলে আপনারও অবশ্যই পারবেন।

 

০০০

সুমাইয়া সুলতানা

 

শখের বসে ব্যবসা শুরু করেননি এই নারী। মায়ের সংগ্রাম দেখে সব সময় স্বপ্ন দেখতেন তাকে কিভাবে খানিক সুখ দেয়া যায়। ২০১৭ সালে মায়ের ওমরাহ করার খরচে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যেই তার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা আনবার’স। ভার্সিটিতে ৩০০ টাকার জুয়েলারি বানানোর সরঞ্জামাদি কিনে হাতেখড়ি। টার্গেট ছিল দেশি   ডিজাইনকে বাইরের দেশে নেয়া। তবে ইনভেস্টমেন্ট তো আর সবাই পায় না! ২০১৮ তে তার বিজনেস ছেড়ে দিতে হয়। পেইজ টা ছিল, আর ছিল মানুষের নানান মন্তব্য। সব কথার উত্তর দিতে   ২০১৯ সালে আবার টিউশন করে জমানো ১০ হাজার  টাকা নিয়ে শুরু করেন। পরিবার, বিশেষ করে মা ও মামি, বন্ধু, পরিচিত   অনেকেই মেন্টালি সাপোর্ট দেন। প্রথমে ভারতীয় পণ্য আনলেও খুঁত লাগত সব কিছুতেই। এখন তার সাথে দেশি ম্যাটেরিয়ালস দিয়ে তৈরি ডিজাইন ও নিয়ে এসেছেন। কোয়ান্টিটি থেকে কোয়ালিটি টাই এখানে প্রাধান্য পায়।

 

০০০

ফারিয়া শাওরিন

 

ছোটোবেলা থেকেই খুব সৃজনশীল ছিলেন। হাতে জিনিস বানাতে ভালো লাগত, জন্মদিনে সাজানো, মেহেদি, আলপনা, ডালা সাজানো, আর কাগজের কাজে সবাই খুব উত্সাহ দিত, সেই থেকে চিন্তা করেন সৃজনশীলতা আর ডিজাইন মিলিয়ে ইভেন্ট প্ল্যানিং করবেন। তার উদ্যোগ ইলেশন অর্থ হলো, ‘অনেক আনন্দ’। শুধু ক্রাফট আইটেম সাপ্লাই করে মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় একটি ইভেন্ট দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি ও তার সহকর্মী যিয়াদ। সম্পূর্ণ হাতে বানানো জিনিস দিয়ে মূলত গতানুগতিক ডিজাইন থেকে একটু ভিন্নরকম আমেজের জন্য সাজানোতে হাতের কাজ রাখেন এবং প্রতিবার সবার চাওয়ামতো কিছু করার চেষ্টা করেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ফেসবুকে তাদের কোনো বিজ্ঞাপন না গেলেও অনেক গ্রাহকের পছন্দের সারিতে তারা আছেন সাধ্য ও বাজেটের মিশেলে সুন্দর কিছু করে দেখাতে। এটি এক প্রকার চ্যালেঞ্জ বলা যায়। অল্প কিছু দিনেই ১০০ জনের বেশি গ্রাহক সেবা দিয়েছে ২ বছরে পা রাখতে যাওয়া ইলেশন।  

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন