মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল বাছাই

‘সেটপিসে’ হারল বাংলাদেশ

আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২০:৫৯

দুই ডিফেন্ডারের মাঝখানে দাঁড়িয়ে স্পট জাম্পে উঠে গোল করলেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক ফরসাদ নূর। তাতেই গত মঙ্গলবার রাতে তাজিকিস্তানের রাজধানী দুসানবের সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামে টার্ফের মাঠে ১-০ গোলে হারলো বাংলাদেশ। কাতার বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ ফুটবলের রাউন্ড টু পর্বের ‘ই’ গ্রুপের খেলাটিতে বাংলাদেশ ৪/৫ গোলে বিধ্বস্ত হলেও বিষ্ময়ের কিছু থাকত না।  

তারপরও হারটি আফসোস বাড়িয়েছে। ২৬ মিনিটে মাঝমাঠ পেরিয়ে সেটপিসের বল। তাতেই আফগান ফরোয়ার্ড ফরসাদ নূর হেড করেন। বলটি গোলকিপার আশরাফুল রানাকে ফাঁকি দিলেও পোস্টের নিচে লেগে গোল হয়। বছর দুই আগেও সেটপিস ছিল বাংলাদেশের ফুটবলের মরণ ব্যাধি। ডাচ কোচ লুডভিক ডি ক্রুইফ এমনটাই বলেছিলেন। সেই রোগটা আবার মাথাচাড়া দিল। হাফচান্স থেকে হওয়া ঐ গোলটি বাদ দিলে আফগানিস্তান আর কোনো ভালো সুযোগ গড়তে পারেনি। গোলটিও হজম করতে হয়েছে রক্ষণভাগের দোষে। দুই  ডিফেন্ডারের মাঝে দাঁড়িয়ে কীভাবে সহজেই হেড করলেন আফগান ফুটবলার, সেই প্রশ্ন তুললেন সাবেক স্ট্রাইকার শেখ মো. আসলাম।

আফগানরা প্রায় পুরোটা সময় বাংলাদেশের আঙিনায় খেলেছে। প্রেসিং ফুটবলে তাদের ধার ছিল। পায়ে পায়ে বলটা রেখে দিয়েছিল বাংলাদেশের সীমানায়। বিক্ষিপ্তভাবে কিছু বল মাঝমাঠ পেরিয়ে জামালদের পায়ে ছুটে এসেছিল। কিন্তু একজন স্ট্রাইকার নিয়ে খেলা বাংলাদেশের আক্রমনভাগে  নাবীব নেওয়াজ জীবন পাত্তাই পাননি।

মাঝমাঠের সীমানার ভেতরে ছিল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ইউরোপে খেলা ফুটবলাররা বাংলাদেশের বাদশা, সাদ, সোহেল রানা, বিপলু, অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া, রবিউল, সুফিল, রহমত, ইব্রাহিম, ইয়াসিন, বিশ্বনাথদের নিয়ে জমিটা দখলে রাখল। খেলার শুরুতেই দুই মিনিটের মাথায় বাংলাদেশ একটা সুযোগ করে নিয়েছিল, কিন্তু সেটি কাজে লাগাতে না পারার দায় নিজেদের। এরপর প্রথমার্ধ আফগানদের দখলেই ছিল বল।

রক্ষণাত্মক ফুটবলের খোলস ছেড়ে দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ আক্রমণে গেছে। সাহস করে খেললে সুযোগ আসতে পারে। সেটি দেরিতে বুঝেছেন ফুটবলাররা। বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে হয়তো সংশয়ে ছিলেন। আফগানদের লম্বা শরীরের ফুটবলাদের টেকনিক, ফিটনেস এবং ইউরোপে খেলার অভিজ্ঞতার বিপক্ষে জেমি তার নিজের খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রাখেননি। তাই হয়তো রক্ষণাত্মক ফুটবল। বিরতির পর আক্রমণে গিয়ে কোচ হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে আরো আগেই সুযোগটা নেওয়া উচিত ছিল। এই অর্ধে বেশ কয়েকবার আক্রমণে গিয়ে আফগানদের রক্ষণ দুর্গে আঘাত করলেও তা ভাঙতে পারেননি নিজেদের ভুলে। আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি বোঝা গেছে জীবনের বাইরে মারা দেখে। রানিং বলের ওপর পা চালাতে অনেকটা সময় নিলেন, এ কারণে ছোটো বক্সের ভেতর থেকেও পোস্টে শট নিতে পারলেন না।

চীনা রেফারি নজর দিলে বাংলাদেশ পেনাল্টি পেতে পারতো। টিভির পর্দায় বারবার দেখা গেছে, আফগান ডিফেন্ডার ফরোয়ার্ড জীবনকে পেছন থেকে ট্যাকল করে ফেলে দিলেও সেটা এড়িয়ে গেলেন রেফারি। তাজিকিস্তানকে হোম ভেন্যু বানানো আফগানিস্তান আফগানদের এটি ছিল দ্বিতীয় ম্যাচ। তারা প্রথম ম্যাচে ০-৬ গোলে হেরেছে কাতারের কাছে। সেই হারের ক্ষতি পুষিয়ে নিল বাংলাদেশকে হারিয়ে।