বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন সিনহা : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০১৯, ১৮:১৭

তারেক রহমান ও প্রিয়া সাহার সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এসকে সিনহার মতো এত বড় দুর্নীতিবাজ বিচার বিভাগে বাংলাদেশে কখনই আসেনি। প্রধান বিচারপতির আসনে বসে তিনি প্রধান বিচারপতির পদটাকে বিতর্কিত করেছেন। সম্মান এবং মর্যাদাহানি করেছেন এবং বাংলাদেশের সংবিধানকে ভূলুণ্ঠিত করেছেন।

শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার’ শীর্ষক ‘আমাদের মতামত’ শিরোনামে এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আলোচনা সভার আয়োজন করেন বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ)।

আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল হচ্ছে : ওবায়দুল কাদের

মন্ত্রী বলেন, তার আদালতে বিচার চলাকালে সাকা চৌধুরীর স্ত্রীর সঙ্গে লন্ডনে দেখা করেছেন। কোনোভাবেই আইন ও বিচার বিভাগের পক্ষে এটা সম্ভব না। যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর ভাইয়ের সঙ্গে সব বিষয়ে যোগাযোগ রেখেছেন। এদেশ থেকে চলে যাওয়ার পর ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন বাংলাদেশ সরকারকে কোনো সহযোগিতা না করার জন্য। এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। তিনি আবেদন করেছেন ভারত সরকার যেন বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক না রাখে। সরকারের সঙ্গে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক বাতিল করার জন্যও বলেছিলেন তিনি।

আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, আমাদের বেশি কিছু বলার প্রয়োজন পড়ে না যেহেতু তার সহকর্মীরা তার সাথে বসে বিচার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এর চেয়ে দুঃখজনক এবং লজ্জার কথা আর কী হতে পারে? ১৪টি অপরাধে সে অপরাধী। আরও অনেক অপরাধ তার আছে। শত শত অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। অনতিবিলম্বে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।

মন্ত্রী বলেন, তিনি কেবল দুর্নীতিই করেননি, আইনকেও লঙ্ঘন করেছেন। তিনি পদে পদে আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাই এমন একটি ব্যক্তির যদি বিচার না হয়, তাহলে বাংলাদেশে কলঙ্কের ইতিহাস থেকে যাবে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার বিচারসহ আরও অনেক বিচারের মধ্য দিয়ে আমরা অনেকগুলো কলঙ্ক থেকে মুক্ত হয়েছি। কাজেই আমরা মনে করি আরেকটা বিচারের মাধ্যমে এই কলঙ্ক থেকে মুক্তি পাওয়া আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য বলে মনে করি।

এসকে সিনহা মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় রাজাকার ছিলেন দাবি করে মন্ত্রী বলেন, সিনহা সেই ছোটবেলা থেকেই ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের লোক। তারেক রহমান, প্রিয়া সাহার সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন। তাই অনতিবিলম্বে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা কেউ বিচারের ঊর্ধ্বে না।

তিনি বলেন, সে যে রায় দিয়েছিল, বাহাত্তরের সংবিধানেও ছিল। বিচারপতিদের অভিসংশনের সুযোগ আছে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারের বিরুদ্ধে অভিসংশনের বিধান আছে। কিন্তু বিচারপতিকে অভিসংশসন করা যাবে না। তারা আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। সে ইচ্ছাকৃতভাবে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করে গেছে। অতীতে তার যেমন পাকিস্তান কানেকশন ছিল বা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আজও সেই ধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন এসকে সিনহা। তাই কোনোমতেই কোনো অজুহাতেই বিচার বা আইনের ঊর্ধ্বে রাখা উচিত হবে না।

বোয়াফ সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি-মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক-স্বদেশ রায়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সহযোগী অধ্যাপক-আরিফা রহমান রুমা প্রমুখ।

ইত্তেফাক/কেআই