শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নারায়ণগঞ্জে ছেলেধরা গুজব আতঙ্ক ছড়াচ্ছে

আপডেট : ২২ জুলাই ২০১৯, ০০:০৭

নারায়ণগঞ্জে ছেলেধরা গুজবে সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত শনিবার মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে সিদ্ধিরগঞ্জে মারা গেছেন একজন এবং এক নারী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ফতুল্লার লালখা এলাকায় রবিবার গণপিটুনিতে আহত হয়েছেন একজন। এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করতে পুলিশ প্রশাসন জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং শুরু করেছে।

গতকাল রবিবার সকালে পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ছেলেধরা গুজব ছড়ানোর দায়ে ১৪ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এ গুজব ছড়ানোর পেছনে কিছু জনপ্রতিনিধি জড়িত রয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি, একটি গোষ্ঠী এই ছেলেধরা গুজবকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করছে। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। এ কারণেই আমরা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করেছি। এই গুজবে কান দেওয়া যাবে না। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আপনারা যদি কাউকে ছেলেধরা বলে সন্দেহ করে থাকেন তাহলে পুলিশকে জানাবেন।

হারুন অর রশিদ বলেন, গত শনিবার সিদ্ধিরগঞ্জে ৩০ বছরের যে যুবককে গণপিটুনিতে মারা হয়েছে, তিনি বাক্প্রতিবন্ধী ছিলেন। নিজের মেয়েকে দেখতে এসে সত্-পিতার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি নিহত হয়েছেন। ছেলেধরা বিষয়টি নিছকই গুজব ছিল। আর এই গুজবে এলাকাবাসী জড়িত। আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছি। এছাড়া ছেলেধরা সন্দেহে শনিবার এক মহিলাকে  এবং আজকেও (রবিবার) ফতুল্লায় একজনকে মারধর করা হয়েছে। আমরা সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছি এবং এসব ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যারা এই গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এলাকার কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এই গুজব ছড়াচ্ছেন। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সেই তদন্ত অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ছেলেধরা গুজবের কারণে বর্তমানে অভিভাবকরাও বেশ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। সন্তানরা বাড়ির বাইরে বের হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে থাকেন তারা। অনেক অভিভাবক ভয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার আগের চেয়ে কমে গেছে। অপরিচিত লোক দেখলেই মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ভিক্ষুক-ফেরিওয়ালারা।