শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘বানে বানে কেমন করি বাচি কনতো’

আপডেট : ২০ জুলাই ২০১৯, ১৭:৪৮

নাগেশ্বরীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির। জেগে ওঠেনি ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট। বন্ধ আছে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী খনন না করায় প্রতি বছর তারা বন্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট এবারের বন্যায় তলিয়ে যায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ড। বামনডাঙ্গার তেলিয়ানীতে বাঁধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। মানুষ আশ্রয় নেয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও অপেক্ষাকৃত উঁচু বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে। 

শুক্রবার বিকেল থেকে পানি নামা শুরু করলেও বাড়ি-ঘর ও রাস্তা-ঘাটসহ সম্পূর্ণ এলাকা এখনও পানির নিচে। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে কমতে থাকলে গ্রাম জেগে উঠতে আরও ৫-৭ দিন সময় লাগবে।
 
বন্যা অন্য ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। ভেসে গেছে বীজতলা, পুকুরের মাছ। তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ গুলো।

বামনডাঙ্গার নামহাইল্যা গ্রামের নুর ইসলাম, রেজিয়া বেগম, ওয়াবদা বাজারের আজিজার রহমান, বাবলু মিয়া, লুছনীর মহিয়া বেগমসহ বন্যার্ত এলাকার অনেকেই বলেন, ‘প্রতিবার বান আইসলে হামাকগুলাক বাড়ী ছাড়ি ছাওয়া পোয়া, গরু-ছাগল নিয়া যাওয়া নাগে। এইড্যা বন্ধ হবারে নোয়ায়। শুনলোং নদীগুল্যা খুরবে, তাকো হুর খোরাখুরি নাই। বানে বানে কেমন করি বাচি কনতো।’

আরও পড়ুন: ‘অভিভাবকহীন’ সেই বেড়িবাঁধ সংস্কারে টাকা বরাদ্দের আশ্বাস

জানা গেছে, প্রায় সাতশ পুকুর তলিয়ে বেরিয়ে গেছে প্রায় ২৩০ মেট্রিক টন মাছ ও ১২ লাখ মাছ। এতে মাছ চাষীদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় নয়শ হেক্টর জমির আউশ ধান, তিনশ হেক্টর বীজতলা, ২৫০ হেক্টর সবজি ক্ষেত, আংশিক নিমজ্জিত দেড় হাজার হেক্টর জমির পাটক্ষেত।

এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে গত ১৫ জুলাই মারা গেছেন আক্তারুজ্জামান মামুন (৪০)। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিছানা থেকে পানিতে পড়ে মারা যায় কচাকাটা সরকারটারী গ্রামের বেলাল হোসেনের ১০ মাসের শিশু জ্যোতি।

ইত্তেফাক/অনি