শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

তারুণ্য শক্তির যথাযথ ব্যবহার

আপডেট : ০৩ জুলাই ২০১৯, ২১:৪৫

তরুণ সমাজ দেশের সবচেয়ে বড়ো সম্পদ। তাদের কাছে জাতির অনেক আশা ও দাবি। তারুণ্য এক প্রত্যয়, চেতনার উত্স, অনুপ্রেরণার অজেয় শক্তি। যারা নিজ প্রতিভায়, উদ্যমে, কর্মযজ্ঞে বদলে দেয় পৃথিবী তারাই তো চিরনবীন। তাদের নিয়েই তো নজরুল-সুকান্ত রচনা করেছেন দ্রোহের-বিপ্লবের হাজারো গান-কবিতা, যা মর্মে মর্মে জাগায় জয়ের প্রতিধ্বনি। তখনই তারুণ্য শক্তির কাছে ভালো কিছু আশা করা যাবে, যখন তরুণদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে যাবতীয় সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশের জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩৫ বছর। আগামী ১৫ বছর পর তারাই রাষ্ট্রের ও সমাজের সবক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের মেধা ও প্রতিভা বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে না দিলে তারা যে শুধু অযোগ্য নাগরিক হবেন তা নয়, তাদের একটি অংশ বিপথগামী হতে পারে।

বাংলাদেশের তরুণরা আজ দেশের আনাচেকানাচে, দুর্গম পাহাড়ে, সুবিধা বঞ্চিত জনপদে, অবহেলিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীতে তাদের ছায়ায় দূর করছে অন্ধকার। তরুণরা প্রতিষ্ঠা করছে স্কুল, ব্লাড ব্যাংক, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিগত ও দলীয় উদ্যোগে। তাছাড়াও তরুণরা আবিষ্কার, সংগীত, চলচ্চিত্র, ক্রীড়াজগত্, ফটোগ্রাফি ইত্যাদিসহ নানা ক্ষেত্রে এনেছে রাষ্ট্রীয় সম্মান। এই তরুণ শক্তিকে যদি যথাযথ ব্যবহার করা হয় এবং তারুণ্য শক্তিকে শানিত করা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে রাষ্ট্রের কল্যাণ বয়ে আনবে।

তারুণ্যের অদম্য শক্তি-সাহসের কাছে যেকোনো কিছু ধরা দিতে এবং অপশক্তি পরাজয় মানতে বাধ্য। একটি দেশ এগিয়ে যায় তারুণ্যের শক্তিতে। যেদেশ তারুণ্যের শক্তিকে যতটুকু কাজে লাগাতে পেরেছে ততটুকু উন্নতির হিমাদ্রি শিখরে পৌঁছেছে। একটি দেশের তরুণদের যদি যথার্থ ব্যবহার যথা—নৈতিক শিক্ষায় বলিয়ান, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ, গবেষণায় নিয়োগ, উদ্যোক্তা হতে উদ্বুদ্ধসহ নানাবিধ ভালো কাজে আনয়ন ও পরামর্শদান করা যায় তাহলে খুব সহজেই উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছানো সম্ভব। নচেত্ দেশের তারুণ্য শক্তি যদি নানা খারাপ কাজ যথা—অবৈধ মেলামেশা, পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত, ইভটিজিংসহ নানা খারাপ কাজে লিপ্ত থাকে এবং যথাযথ নৈতিক শিক্ষা প্রদান এবং দেশপ্রেমের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা না যায় তখন দেশের জন্য আশীর্বাদ না হয়ে অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে এই তারুণ্যের শক্তি।

তারুণ্য শক্তি, তারুণ্য বল, তারুণ্যের হাত ধরে এগিয়ে চলবে সোনার বাংলাদেশ। তাই তারুণ্যের শক্তির যথাযথ প্রয়োগে আমাদের মনোনিবেশ করা খুবই প্রয়োজন। তরুণদের সঠিকভাবে গড়ে তোলা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। তাই রাষ্ট্রের সুনজর একান্ত কাম্য। সুস্থ সবল, সত্ নিরপেক্ষ, নির্ভীক, গণতান্ত্রিক, স্বপ্নচারী তারুণ্যের জয় হোক। তারুণ্যের শক্তিতে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাক প্রিয় বাংলাদেশ।

n লেখক :শিক্ষার্থী, ১ম বর্ষ, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়