শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ক্যারিবিয়ান কৌশলে চ্যালেঞ্জ দেখছে বাংলাদেশ

আপডেট : ১৫ জুন ২০১৯, ২২:৪৪

বিশ্বকাপে নিজেদের খেলার কৌশল পাল্টে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম দশ ওভারে ওদের বোলাররা শর্ট বল করছে। পাশাপাশি দিচ্ছে কিছু স্কোরিং বলও। এর উদ্দেশ্য আর কিছু না। প্রতিপক্ষের টপ অর্ডারে ধস নামানোই লক্ষ্য। এতে সফলও হচ্ছে জেসন হোল্ডারের দল। চলতি বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ান ফার্স্ট বোলাররা এখন পর্যন্ত দুর্ধর্ষ বোলিং করেছেন। বৃষ্টি আসার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঝটপট দুটি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন শেল্ডন কট্রেল। ইংল্যান্ডের সাথে হেরে যাওয়া ম্যাচেও সফলতা পেয়েছেন তাদের আরেক পেসার শেনন গ্যাব্রিয়েল। ৭ ওভারে ৪৯ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন গ্যাব্রিয়েল। ম্যাচের শুরুতে শর্ট বলের কৌশলটা অভিনব। নিকট অতীতে তারা এটা করেনি। এমনকি আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও না। কাজটা ওরা বিশ্বকাপ শুরুর পর থেকেই করছে বলে মনে করেন বাংলাদেশের অন্যতম উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। আর এই কৌশলকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই বাংলাদেশ নিজেদের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বলে জানালেন তামিম। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গতকাল সমারসেট কাউন্টি মাঠে অনুশীলনেও শর্ট বলেই ব্যাট ঝালিয়ে নিয়েছেন তামিম, সৌম্যরা।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ম্যাচের কথা মাথায় রেখেই কি শর্ট বলে অনুশীলন সারা হচ্ছে। তামিম জানালেন, অবশ্যই। প্রতিটা ম্যাচের আগে আপনাকে চিন্তা করতে হবে যে প্রতিপক্ষ আপনাকে কীভাবে টার্গেট করবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ১০-১৫ ওভার এই জিনিসটার ওপরই জোর দেয়। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ যেই হোক না কেন। আমাদের আরো মনে রাখতে হবে— শর্ট বলের পাশাপাশি ওরা রান স্কোরিং বলও দেয়। আমরা সবরকম আক্রমণের জন্যই প্রস্তুত রয়েছি। ওই কারণেই আমরা অনুশীলনে ওই হার্ড ওয়ার্কটা করার চেষ্টা করেছি। তামিম বলেন, ওদের ব্যাটসম্যান, বোলারদের ব্যাপারে আমাদের পূর্ব ধারণা আছে। আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে যখন আমরা খেলেছি, ওরা এখন যে পরিকল্পনায় আছে সেটা তখন ছিল না। এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে হবে। সঠিক সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

টনটনে খুব একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয় না। তবে বাম হাতি ওপেনারদের ভালো রেকর্ড আছে এখানে। সৌরভ গাঙ্গুলির একটা সেঞ্চুরি আছে। পাকিস্তানের সাথে গত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার সেঞ্চুরি করেছে। এবার কি তামিম ইকবালের পালা। হেসে দিয়ে তামিম বলেন, আশা তো করি। তবে ভালো লাগবে সেঞ্চুরি হলে। আমি বা দলের অন্য যেই হই না কেন। আমিও কোনো সময় খেলিনি এই মাঠে। তবে সবসময় শুনে আসছি যে এই মাঠ ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। এখন ওরা উইকেট একটু অন্যরকমভাবে বানাচ্ছে। সবসময় যেমনটা থাকে এখানে, এখন  ঐ রকম না। অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের শেষ খেলায় বোলাররা একটু সহায়তা পেয়েছে। কন্ডিশনটাও খুব একটা অনুকূলে না। যে উইকেটই হোক না কেন, আমাদের ভালো খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

টনটন সম্পর্কে বলা হচ্ছে, এখানকার মাঠ খুব ছোট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমে কয়েকজন পাওয়ার হিটার আছে। একটা সাধারণ শটও ছক্কা হতে পারে। এটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য আলাদা কোনো বার্তা দিচ্ছে কি না। তামিম বলেন, ছোট মাঠ অনেক সময় বড় হয়ে যায় আবার বড় মাঠও অনেক সময় ছোট লাগে। এটা নির্ভর করে ওইদিনের খেলাটা আপনি কতটা খেলতে পারছেন। মাঠ নিয়ে ভাবার কিছু নেই। যে কোনো মাঠেই ছক্কা হতে পারে। কার্ডিফের মাঠে ইংল্যান্ড আমাদের সাথে ৩৮৬ করেছে। টনটনকে যদি আপনি ছোট মাঠ বলেন, এখানে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানের সাথে ৩০৭ রানে অলআউট হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ারতো পাওয়ার হিটার কম নেই। আসলে মাঠের আকার বড় কথা না। আমাদের টিমে হয়তো ওই মাপের বিগ হিটার নেই। তবে যতটা দরকার ততটা তো আছে।

এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এখনো পাঁচটা ম্যাচ বাকি। এ নিয়ে দলের ভাবনা কি, তামিম বলেন— দেখেন কয়টা জিততে হবে, আর কয়টা জিতলে আমরা কোয়ালিফাই করব, সত্যি কথা বলতে কি এমন করে কেউ ভাবছি না আমরা। গত ম্যাচটা (শ্রীলঙ্কার সাথে) হওয়া আমাদের জন্য দরকার ছিল। খেলায় আমরা জিততে পারলে আমাদের জন্য ভালো হতো। তবে ৫ জুলাই ভারত ম্যাচের আগে আমরা (পয়েন্ট টেবিল) নিয়ে আসলে ওইভাবে ভাবছি না। ওই ম্যাচের আগে প্রতি ম্যাচ নিয়ে আলাদাভাবে ভাবছি। বাকি পাঁচটার মধ্যে বেশির ভাগ ম্যাচই আমাদের জিততে হবে, যদি আমরা কোয়ালিফাই করতে চাই। তার আগেই যদি ফিনিশ লাইনটা দেখে ফেলি তাহলে আমার মনে হয় না এটা কোনো ভালো আইডিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তামিম বলেন, আপনি যখন একটি ম্যাচ জিতবেন দেখবেন যে, পয়েন্ট টেবিলে অনেক কিছু উলটাপালটা হয়ে গেছে। তখন আপনি বুঝতে পারবেন আপনি কোথায় আছেন।