শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মহিমান্বিত ‘লাইলাতুল কদর’

আপডেট : ৩০ মে ২০১৯, ২২:১৮

‘লাইলাতুল কদর’ মানে হচ্ছে, ‘কদর’-এর রাত’ । আর ‘কদর’ মানে হচ্ছে, মাহাত্ম ও সম্মান। অর্থাত্ মাহাত্মপূর্ণ রাত্রি ও ‘সম্মানিত রাত্রি’। এ রাতের বিরাট মাহাত্ম ও অপরিসীম মর্যাদার কারণে রাতটিকে ‘লাইলাতুল কদর’ তথা মহিমান্বিত রাত বলা হয়।  এ রাতে পরবর্তী এক বছরের অবধারিত বিধিলিপি ব্যবস্থাপক ও প্রয়োগকারী ফেরেশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাতে প্রত্যেক মানুষের বয়স, মৃত্যু, রিজিক, বৃষ্টি ইত্যাদির মেয়াদ ও পরিমাণ নির্দিষ্ট করে তা সংশ্লিষ্ট ফেরেশতাগণকে লিখে দেওয়া হয়। এমনকি এ বছর কে হজ করবে, তাও লিখে দেওয়া হয়। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) এর বক্তব্য মতে, চারজন ফেরেশতাকে এসব কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন: ইসরাফীল, মীকাঈল, আজরাইল ও জিবরাইল (আ)। পবিত্র কুরআন ত্রিশপারা একসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছিল এরাতেই। এ রাতের ফজিলত ও মর্যাদার বিষয়ে খোদ মহান আল্লাহ ‘সুরাতুল কদর’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সুরা অবতীর্ণ করে দিয়েছেন।  এর চেয়ে বড় মাহাত্ম্য ও মর্যাদা আর কী হতে পারে? মহান আল্লাহ নিজেই এ রাতের মহিমা বর্ণনায় ইরশাদ করেছেন: ‘কদরের রাত্রি এক হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ’ (৯৭:০৩)। অর্থাত্ কারো এক নাগাড়ে এক হাজার মাস বা ৮৩ বছর ৪ মাসাধিক কাল পর্যন্ত ইবাদত করার যে ফজিলত বা সওয়াব পাওয়া যায়, তা এ এক রাতের ইবাদতের দ্বারাই মহান আল্লাহ প্রদান করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফের হাদিসে বর্ণিত হয়েছে— ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে (ঈমানসহ) এবং সওয়াব প্রাপ্তির প্রত্যাশায় এ রাত্রে রাত্রি জেগে ইবাদত- বন্দেগী করবে, তার পূর্ববর্তী জীবনের সকল পাপ মোচন করে দেওয়া হবে।’

লাইলাতুল কদরের আমল: লাইলাতুল কদরের আমল সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি রসুলুল্লাহ (স)কে বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ্! আমি যদি লাইলাতুল কদর পেয়ে যাই, তাহলে সেই রাতে আমি কী দোয়া করবো? উত্তরে রসুল (স) বললেন, তুমি বলবে- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুবুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি। অর্থাত্ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করা পছন্দ করেন, সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মিশকাত) তা ছাড়া, এ রাতের জন্য নির্দিষ্টভাবে কোনো ইবাদতের উল্লেখ নেই। তবে যেহেতু রাতটি খুবই মহিমান্বিত তাই এ রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ, কুরআন শরিফ তিলাওয়াত, দরূদ, তাসবীহ-তাহলীল, জিকির-আযকার, দান-খয়রাত, তাওবা-ইসতিগফার করা যেতে পারে।

lলেখক : মুফতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বায়তুল মোকাররম, ঢাকা

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন