শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সাব-ইন্সপেক্টর নেবে বাংলাদেশ পুলিশ

আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৫৪

সম্প্রতি জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিরস্ত্র শাখায় বহিরাগত ক্যাডেট হিসেবে সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে এ নিয়োগ দেয়া হবে। প্রার্থীদের কয়েক ধাপে বাছাই করা হবে। যোগ্য ও আগ্রহীরা চাইলে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি ভালোভাবে দেখে আবেদন করতে পারেন উল্লিখিত পদে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আবেদনের কার্যক্রম, চলবে আগামী ৭ মে, ২০১৯ খ্রি. পর্যন্ত। বিস্তারিত লিখেছেন এম হোসাইন

আবেদনের যোগ্যতা

কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষ স্নাতক ডিগ্রিধারীরাই এসআই পদের জন্য বাছাই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। সাধারণ ও অন্যান্য কোটার প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স হতে হবে ১৯ থেকে ২৭ বছর (১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে)। মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ১৯ থেকে ৩২ বছর। পুরুষদের উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। নারীদের বেলায় উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) অনুযায়ী বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে ওজনের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে।

 

আবেদন প্রক্রিয়া

২৮, ২৯ ও ৩০ এপ্রিল আট বিভাগের নির্ধারিত স্থানে শারীরিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় প্রার্থীকে শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ, সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের দেওয়া চারিত্রিক সনদপত্র, সত্যায়িত তিন কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি, স্থায়ী নাগরিকত্বের সনদপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র (না থাকলে মা কিংবা বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূলকপি) সঙ্গে আনতে হবে।

কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা প্রমাণের জন্য এমএস অফিস, ইন্টারনেট ও ট্রাবল শ্যুটিংয়ের ওপর কমপক্ষে তিন সপ্তাহের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদের মূলকপিও লাগবে। কোটা ও চাকরিরত প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেখাতে হবে।

৩৩তম ব্যাচে নিয়োগ পাওয়া এসআই মো. আব্দুর রহিম জানান, শারীরিক মাপ ও বিএমআই নেওয়ার পর ফিটনেস যাচাইয়ের জন্য দৌড়, হাই জাম্প, লং জাম্প ও রশি দিয়ে ওঠার পরীক্ষা নেওয়া হয়।

প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষায় পাস করার পর লিখিত পরীক্ষার আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে নিজ নিজ রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয় থেকে। লিখিত পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা বাংলাদেশ পুলিশের অনুকূলে যেকোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ১-২২১১-০০০০-২০৩১ অথবা ১২২০২০১১০৫৯৫৪১৪২২৩২৬ নম্বর কোডে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে এর মূলকপি আবেদন ফরমের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ পূরণকৃত আবেদন ফরম আগামী ৭ মে ২০১৯ তারিখের মধ্যে একই কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।

 

পরীক্ষার ধরন ও প্রস্তুতি

লিখিত পরীক্ষা তিন ধাপে ২২৫ নম্বরে। প্রথম দিন ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশনের ওপর ১০০ নম্বরের পরীক্ষা। দ্বিতীয় দিন সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিতে ১০০। সবশেষে মনস্তত্ত্বে ২৫ নম্বরের পরীক্ষা।

সাধারণত পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির বই থেকেই বেশি প্রশ্ন আসে। ৪৫ শতাংশ নম্বর পেলেই পাস ধরা হয়।

ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন : ৩৪তম ব্যাচে নিয়োগ পাওয়া এসআই মো. মোরশেদ আলম জানান, ইংরেজিতে ৫০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। বাকি ৫০ বাংলা রচনা ও কম্পোজিশনে।

ইংরেজি অংশে সাধারণত Essay (১৫ নম্বর) ও Letter (১০ নম্বর) লিখতে হয়। বাকি ২৫ নম্বর আসে Translation, Fill in the blanks ও Phrase and Idioms-এর ওপর।

বিগত নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতে দেখা গিয়েছে বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন অংশে একটি রচনা (১৫ নম্বর) ও ভাব-সম্প্রসারণ (১০) লিখতে হয়। এ ছাড়া বাগধারা দিয়ে বাক্য তৈরিতে ১০, এককথায় প্রকাশে ৫ ও বঙ্গানুবাদে ১০ নম্বর বরাদ্দ থাকে।

সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত : পাটিগণিত ও সাধারণ জ্ঞানে ৫০ করে মোট ১০০ নম্বর। ৩৪তম ব্যাচে নিয়োগ পাওয়া এসআই মো. মোরশেদ আলম জানান, গণিত অংশ পাঁচটি প্রশ্ন দিয়ে সাজানো থাকতে পারে। পাটিগণিতের পাশাপাশি বীজগণিত ও জ্যামিতি (নবম-দশম শ্রেণির) থেকেও প্রশ্ন হয়। সুদকষা, লাভ-ক্ষতি, ঐকিক নিয়ম, সরল, শতকরা, উত্পাদক, মান নির্ণয় থেকে সাধারণত বেশি প্রশ্ন থাকে। অষ্টম শ্রেণির গণিত বইয়ের পাটিগণিত অংশ ও বিভিন্ন শ্রেণির পুরনো সিলেবাসের পাটিগণিত বই অনুশীলন করলে পরীক্ষায় ভালো করা যাবে।

এর আগে অনুষ্ঠিত সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি থেকে প্রশ্ন এসেছে। রোহিঙ্গা সমস্যা, সিরিয়া সংকট, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, উত্তর কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেও প্রশ্ন আসতে পারে।

বাংলাদেশ অংশে মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের সংবিধান, উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব, আলোচিত ঘটনা, স্থাপনা, ঐতিহাসিক স্থান থেকে প্রশ্ন থাকতে পারে।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের পাশাপাশি বর্ণনামূলক, এককথায় প্রকাশ, টীকা আকারেও প্রশ্ন আসতে পারে।

 

মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা

মনস্তত্ত্ব পরীক্ষায় আইকিউ ও কুইজ টাইপের প্রশ্ন থাকতে পারে। অনেক সময় পাটিগণিত ও জ্যামিতির ধাঁধাও দেওয়া থাকে। সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য, শব্দ বা সংখ্যা চিহ্নিতকরণ, সমস্যার সমাধান, সম্পর্ক নির্ণয়, গাণিতিক যুক্তি, সাধারণ জ্ঞান, পূর্ণরূপ, সঠিক উত্তর, সংক্ষিপ্ত টীকা আকারেও প্রশ্ন থাকতে পারে।

 

মৌখিক পরীক্ষা

মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নেই। একজন প্রার্থী স্নাতক পর্যন্ত যা পড়েছে, যা দেখেছে, যা শুনেছে, তা থেকেই প্রশ্ন আসবে। এ পরীক্ষায় প্রার্থীর মনস্তত্ত্ব বা মানসিক বিকাশ যাচাই করা হয়। প্রার্থীর নিজ জেলা, উপজেলা নিয়েও প্রশ্ন করা হতে পারে।

 

প্রশিক্ষণ

নির্বাচিত প্রার্থীদের রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে। প্রশিক্ষণের সময় বিনা খরচায় থাকা-খাওয়া, ইউনিফর্ম, চিকিত্সাসেবা দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রার্থীরা মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা পাবে।

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন