স্বর্ণ অশোক বহুবর্ষী বৃক্ষ বিশেষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Saraca thaipingensis। গাছটি Fabaceae পরিবারের সদস্য। ফুল উজ্জ্বল সোনালি রঙের বলেই নাম স্বর্ণ অশোক।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশে স্বর্ণ অশোক সহজলভ্য। বাংলাদেশে এ গাছ খুব একটা দেখা যায় না। তবে ঢাকার গার্ডেনের সাইকি অংশে রাজ অশোক ও কাউলি অশোক-এর সঙ্গে নামে স্বর্ণ অশোক গাছ রয়েছে। ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে স্বর্ণ অশোক গাছের ছবিটি তুলেছি গত ১১ জানুয়ারি।
গাছ মাঝারি আকৃতির। এই গাছ ৭ থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছের কাণ্ডের রং কালচে এবং প্রায় মসৃণ। কাণ্ড কালচে রঙের, ডালপালা ঊর্ধ্বমুখী ও শক্তপোক্ত ধরনের। পৌষ ও মাঘ মাসে ফুল ফোটে। রাতের বেলায় এ ফুল থেকে হালকা মিষ্টি গন্ধ ভেসে আসে। ফুল থেকে চ্যাপ্টা শিমের মতো ফল হয়। অন্যান্য অশোকের চেয়ে স্বর্ণ অশোকের পাতা কিছুটা বড়। পাতার রং সবুজ, তবে কচি পাতার রং তামাটে লাল। স্বর্ণ অশোকের পাতার মতো ফুল ও ছালও ঔষধিগুণে ভরপুর। ঔষধে, কাব্যে, সৌন্দর্যে অশোক অপ্রতিদ্বন্দ্বী। হেমন্তের শেষ থেকে সারা শীতকাল স্বর্ণ অশোক সোনার আভা ও সৌরভ ছড়ায়। পৌষের প্রথম ভাগেই এ গাছের কাণ্ড ও ডালপালাজুড়ে সুগন্ধি ফুলগুলো ফুটতে শুরু করে। আমাদের দেশে যে কয়েক ধরনের অশোক পাওয়া যায় তার মধ্যে স্বর্ণ অশোক বেশ আকর্ষণীয়। অন্যান্য অশোকের সঙ্গে প্রস্ফুটনকালের কিছুটা ভিন্নতাও রয়েছে। গাছজুড়ে হলুদ- সোনালি রঙের অসংখ্য গুচ্ছবদ্ধ ফুল ফোটে। তখন ডালপালা পুষপভারে কিছুটা আনত থাকে। গুচ্ছবদ্ধ ফুলগুলো উজ্জ্বল রঙের হওয়ায় অনেক দূর থেকেই নজর কাড়ে। বীজ থেকে চারা হয়। এছাড়া ডালে গুটি কলমের মাধ্যমেও চারা তৈরি করা যায়।