বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নির্ণয়মূলক প্রশ্নের উত্তরে পূর্ণ নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে

আপডেট : ২৩ মার্চ ২০১৯, ২১:০৯

বাংলা দ্বিতীয়পত্র

মো. সুজাউদ দৌলা

সহকারী অধ্যাপক (বাংলা)

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা

 

 

 

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, বাংলা ২য় পত্রে সবার আগে ৩০ মার্কস-এর ব্যাকরণের কথা আসে। এখানে মোট ৬টি প্রশ্ন। প্রতিটি প্রশ্নের মান পাঁচ। সকল প্রশ্নে একটি বর্ণনামূলক এবং এর অথবা’য় একটি করে নির্ণয়মূলক প্রশ্ন থাকে। আমার মনে হয় নির্ণয়মূলক প্রশ্নের উত্তর করা ভালো। তাতে পূর্ণ মার্কস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং কিছু সময়েরও সাশ্রয় হয়, এ সাশ্রয়ী সময় তুমি প্রবন্ধ রচনায় বা ভাব-সম্প্রসারণে ব্যবহার করতে পারো। তবে এখানে যে বর্ণনামূলক প্রশ্ন আছে (যেমন: উদাহরণসহ ‘এ’ স্বরধ্বনির উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ); সেগুলোতেও পুরো মার্কস পাওয়া যাবে, তবে অবশ্যই তোমাকে সঠিক উত্তর লিখতে হবে।

পারিভাষিক শব্দ আর বঙ্গানুবাদ এদের মধ্যে পারিভাষিক শব্দ লেখা অবশ্যই ভালো। বঙ্গানুবাদ লিখলে ১০ এ ১০ পাওয়া অত্যন্ত কঠিন কিন্তু পারিভাষিক শব্দ লিখতে তুমি ১০ এ ১০ ই পাবে, অবশ্য যদি কোনো ভুল না হয়। তবে একটু সচেতন থাকলে এক্ষেত্রে পূর্ণ মার্কস পাওয়া সহজ। এখানে ১০টির উত্তর লিখতে বললেও প্রশ্নে থাকবে ১৫টি, এটা একটা বড় সুবিধা বলা যায়।

ভাব-সম্প্রসারণ লেখার সময় বিশেষভাবে খেয়াল রাখবে; এখানে কোনো উদ্ধৃতি বা কবিতার লাইন ব্যবহার করবে না। তিনটা প্যারায় লেখা শেষ করবে। প্যারায় কোনো শিরোনাম ব্যবহার করবে না। ভাবের সম্প্রসারণ তো, তাই একটু বিস্তারিত অর্থাত্ সাইজে বড় হলে ভালো হয়। মনে প্রশ্ন আসতে পারে, কেমন বড় ? এক পৃষ্ঠায় যদি ১৩/১৪ লাইন লেখ, তাহলে কমপক্ষে ৪পৃষ্ঠা (২পাতা) লেখা ভালো। এখানে সারাংশ/সারমর্ম আছে। ভাবসম্প্রসারণ না লিখে সারাংশ অথবা সারমর্মও লিখতে পারো। এটা লিখবে কম সময় লাগবে, তাতে তোমার সময় বাঁচবে।

ভাষণ/প্রতিবেদন অথবা দিনলিপি/অভিজ্ঞতা বর্ণনা যেটা তোমার ইচ্ছা লিখতে পারো। ভাষণ লিখলে কম নম্বর আসে বা প্রতিবেদন লিখলে বেশি নম্বর আসে এমন কথার ভিত্তি নেই। তবে যেটা দেখেছি প্রতিবেদনের বিভিন্ন নিয়ম প্রচলিত থাকায় ছাত্র/ছাত্রীরা বিভ্রান্তিতে থাকে কীভাবে লিখবে সেটা নিয়ে। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ, যারা এ বিভ্রান্তির মধ্যে আছ তাদের ভাষণ লেখাই ভালো, কারণ এখানে কোনো একাধিক নিয়ম নেই। আর দিনলিপি বা অভিজ্ঞতা বর্ণনাও লিখতে পারো। এগুলোর মুখস্থের কোনো বিষয় নয়। চর্চার মাধ্যমে এগুলোর মান সুন্দর হয়।

চিঠিপত্র লেখার ক্ষেত্রে আমার যেটা মনে হয়, মানপত্র বা সংবাদপত্রে প্রকাশের উপযোগী পত্র লিখে বেশি সময় নষ্ট না করে দরখাস্থ বা নিমন্ত্রণপত্র বা ব্যক্তিগতপত্র (এখানে অবশ্য বেশি কথা আসতে পারে তবে সেটা সংক্ষেপেও বলা যায়) লেখা ভালো। এটা কম সময়ে লিখে কিছু সময় বাঁচানো যেতে পারে, যে সময়টুকু তুমি অন্য কোনো প্রশ্নের উত্তরে ব্যবহার করতে পারো। তবে যেটাই লেখো না কেন সঠিক উত্তর দিলে নম্বরের কোনো হেরফের হবে না। অবশ্য এখানে তুমি বৈদ্যুতিন চিঠি বা খুদে বার্তা লিখতেও পারো। এটা খুব ছোট আইটেম তাই যেন ভেবো না মাত্র এতটুকু লিখলে ১০ এর মধ্যে আর কত নম্বরই বা পাওয়া যাবে ! 

সবশেষে প্রবন্ধ রচনার কথা বলি। এটা একটা বড় আইটেম। এটা সবার শেষে লেখা ভালো। এর জন্য তোমাকে কমপক্ষে ৫০/৫৫ মিনিট বা এক ঘন্টা সময় হাতে  রাখতে হবে। যেহেতু এখানে নম্বর ২০, তাই তুমি এক পৃষ্ঠায় যদি ১৩/১৪ লাইন করে লেখ তাহলে ২০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত লিখতে পারো। রচনা লেখার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই তোমার, এ ক্ষেত্রে তুমি বন্ধনহীন। বলা যায়, ‘আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে তোমারে করেছি রচনা।’ কবিতার লাইন, বাংলা বা ইংরেজি উদ্ধৃতি বা অন্য কিছু যা তোমার ইচ্ছা অর্থাত্ যত সুন্দর করা যায় ভালো। তবে সময়ের দিকে অবশ্যই তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে।

সবশেষে হাতের লেখা সম্বন্ধে একটু বলি। বাংলা বিষয়ে বেশি নম্বর পেতে সুন্দর হাতের লেখা যত বেশি সহায়ক হবে, অন্য আর কোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে তা হবে না। তাই সুন্দর হাতের লেখার প্রতি মনোযোগী হবে। অবশ্য ভয়ের কিছু নেই। লেখা খুব সুন্দর না হলেও বর্ণ/অক্ষরগুলো স্পষ্ট করে লিখলে চলবে।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন