শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিকদের অসহযোগিতায় সমরাস্ত্র খালাসের চেষ্টা ব্যর্থ

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০১৯, ২২:৩১

আজ ১৪ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেছে। এইদিন জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে যোগদানের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৪ দফা পূর্বশর্ত মেনে নেওয়ার দাবিতে রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র-শ্রমিক, পেশাজীবী সংগঠন এবং যুব মহিলা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সভা-সমাবেশ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন সকালে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ নেতা খান আবদুল ওয়ালী খান আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন। বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে রুদ্ধদ্বার কক্ষে প্রায় দেড়ঘণ্টা ব্যাপী আলোচনাকালে জাতীয় পরিষদে আওয়ামী পার্লামেন্টারি দলের উপনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম কামরুজ্জামানসহ অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, স্বাধীন দেশে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে জীবন-যাপনের জন্যই আমাদের সংগ্রাম।

এদিন রাতে বঙ্গবন্ধু এক বিবৃতিতে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে নতুন নির্দেশ ঘোষণা করেন। দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে নির্মূল করা যাবে না। আমরা অজেয়, কারণ আমরা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত।

বঙ্গবন্ধুর অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে সংবাদপত্র প্রেস কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে সকালে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে সমাবেশ শেষে মিছিলসহ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে তার হাতে একটি আবেদনপত্র দেওয়া হয়। তাতে নেতারা যে কোনো নির্দেশ পালনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে অবিলম্বে একটি জাতীয় সরকার গঠন ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ঘোষণার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুরোধ জানান।

করাচিতে নিশাত পার্কে পিপলস পার্টির উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসভায় পিপিপির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানের দুই অংশের দুই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব করেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে তার সঙ্গে সংলাপ শুরু করার জন্য বঙ্গবন্ধুর প্রতি আহ্বান জানান।

বরিশালে এক জনসভায় বাংলা জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অস্থায়ী সরকার গঠন করার আহ্বান জানান।

১১৫ নম্বর সামরিক নির্দেশের প্রতিবাদে দেশরক্ষা বিভাগের বেসামরিক কর্মচারীরা নগরীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে তারা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে তার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

এইদিন বাংলাদেশের জন্য খাদ্যশস্যবাহী ‘মন্টেসেলো ভিক্টরি’ নামের আর একটি জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে করাচি নিয়ে যাওয়া হয়। ‘ওসান এন্ডুরাস’ নামের সমরাস্ত্রবাহী আর একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের ১০ নম্বর জেটিতে নোঙর করে। বন্দর শ্রমিকদের অসহযোগিতার কারণে ৯ মার্চ ১৬ নম্বর জেটিতে সমরাস্ত্রবাহী অপর জাহাজ ‘সোয়াত’ এর সমরাস্ত্র খালাসের চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়।

স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ দেশ থেকে সম্পদ পাচার প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করে।