বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে অর্ধকোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে গ্রীন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই আদেশ বাস্তবায়ন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে অত্যাধুনিক হাসপাতাল, যেখানে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয় সেখানে তার পা সংযোজন এবং পরবর্তী চিকিত্সা ব্যয় বহন করতে যে অর্থের প্রয়োজন তা প্রদান করতে ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। তিনি বলেন, রাসেল সরকারের এ পর্যন্ত চিকিত্সার পেছনে ১৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। হাইকোর্ট ওই টাকাও দিতে গ্রীন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বলেছে।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভারের ঢালে রাসেলের গাড়িকে ধাক্কা দেয় গ্রীন লাইন পরিবহনের একটি বাস। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে রেন্ট এ কার প্রতিষ্ঠানের চালক রাসেলের উপর দিয়ে বাস চালিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলেই তার শরীর থেকে বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট করেন ওই সময়ের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। শুনানি শেষে হাইকোর্ট রাসেলকে কেন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। ওই রুলের শুনানিকালে হাইকোর্ট এই অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়। আদালতে রিটকারী পক্ষে আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের পক্ষে মো. ওজিউল্লাহ শুনানি করেন। এ সময় আদালতে রাসেল তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হাজির ছিলেন।
আদেশের পর রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আমি আশায় বুক বাঁধতে পারছি না। সরকারের প্রতি অনুরোধ আমার প্রতি যেন নজর দেওয়া হয়। কারণ ইতোমধ্যে ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছি। আর পঙ্গু হওয়ার কারণে আমাকে কেউ চাকরি দিচ্ছে না।