শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মনীষী

স্মরণীয় সাংবাদিক

আপডেট : ০৩ মার্চ ২০১৯, ১৯:৫১

জীবিতকালেই যিনি ‘সম্পাদক’ হিসেবে কিংবদন্তির মতো খ্যাত হয়েছিলেন—তিনি আবুল কালাম শামসুদ্দিন (১৮৯৭-১৯৭৮)। সাংবাদিক জগতে তিনি ছিলেন এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব। একালের অনেকেই প্রায় আবাল্য তাঁর নামের সঙ্গে পরিচিত। অনেকের শৈশবের স্মৃতিতে খবরের কাগজের সম্পাদক মানেই আবুল কালাম শামসুদ্দীন। তাঁর এই ব্যাপক পরিচিতির কারণ কী? কারণ সেকালে এত দীর্ঘ সময় ধরে আর কোনো সাংবাদিক একটি দৈনিক পত্রিকা সম্পাদনা করেননি। তাও নগণ্য কোনো দৈনিক নয়। ‘আজাদ’-এর মতো প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় দৈনিক। দৈনিক আজাদ (প্রকাশকাল ১৯৩৬) মাওলানা আকরম খাঁ-র পত্রিকা হলেও আবুল কালাম শামসুদ্দীন ১৯৪০ থেকে ১৯৬২ সন পর্যন্ত একটানা ‘আজাদ’-এর সম্পাদক ছিলেন। আর ঐ কালটা ছিল উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচে উত্তপ্ত সময়। চল্লিশের দশকে দৈনিক ‘আজাদ’ ছিল মুসলমানদের স্বতন্ত্র আবাসভূমি ‘পাকিস্তান’ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে একক কণ্ঠস্বর। সেই ‘আজাদ’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন আবুল কালাম শামসুদ্দীন। ফলে সম্পাদক হিসাবে তাঁর জনপ্রিয়তা সেই চল্লিশের দশক থেকে শুরু। ১৯৬২ সনে তিনি যখন ‘আজাদ’ সম্পাদনার দায়িত্ব ছেড়ে দেন তখন তিনি সম্পাদক হিসেবে একটি বড় ‘প্রতিষ্ঠানে’ পরিণত। সম্পাদক হিসেবে তিনি পাঠক তথা দেশবাসীর যে আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছিলেন তা সত্যি বিরল।

আবুল কালাম শামসুদ্দীন সাহিত্যিক হিসেবেও নন্দিত। সাংবাদিকতায় আসার অনেক আগেই তিনি একজন সাহিত্য সমালোচক হিসেবে বিশেষ পরিচিতি অর্জন করেন। তিনি যদি সাংবাদিকতা পেশায় নাও আসতেন তবু একজন সাহিত্য সমালোচক ও অনুবাদক হিসেবেই বাংলা সাহিত্যে তাঁর স্থান অনেক উঁচুতে থাকত। সাহিত্যচর্চা করলেও, সাংবাদিকতাকেই তিনি পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন এবং সাংবাদিক হিসেবেই তিনি বেঁচে থাকবেন। একজন সূক্ষ্মদর্শী অগ্রণী সমালোচক এবং দক্ষ অনুবাদক হিসেবেও তিনি হয়ে থাকবেন স্মরণীয়।    (অংশবিশেষ)

লেখকের ‘স্মরণীয় সাংবাদিক’ (ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ১৯৮৫) বই থেকে