শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিয়ের পর ৪৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে প্রবাসীকে তালাক

আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:৫৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার এক প্রবাসী স্বামীর কাছ থেকে প্রতারণা করে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ও তিনশত গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়ে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এই অর্থ প্রতারণার অভিযোগ এনে তালাকপ্রাপ্ত স্বামীর মা মোছা. জায়েদা বেগম বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা (সিআর ৩০/২০১৯) দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদীর কৌসুলি অ্যাডভোকেট ড. তসিকুল ইসলাম।

ওই স্কুল শিক্ষিকা হলেন- শিবগঞ্জ পৌর এলাকার সেলিমাবাদ গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে মোছা. হিরা খাতুন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।

আরো পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আলী খান স্ব-পরিবারে অবরুদ্ধ

মামলা সূত্রে জানা গেছে- শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর এলাকার আসাদুর রহমানের ছেলে প্রবাসী কামরুজ্জামান দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার সুবাদে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার সেলিমাবাদ গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মোছা. হিরা খাতুন বিয়ে ও সন্তানের কথা গোপন রেখে প্রবাসী কামরুজ্জামানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ে করেন। তবে প্রবাসী কামরুজ্জামান ওই স্কুল শিক্ষিকার পূর্বের বিয়ে ও সন্তানের কথা জানতেন না। বিয়ের পর সিঙ্গাপুরে কাজে যোগদান করেন কামরুজ্জামান। এরপর হিরা খাতুন দ্বিতীয় স্বামী কামরুজ্জমানের কাছ থেকে কয়েক দফায় নগদ ৪৫ লাখ টাকা ও তিনশত গ্রাম ওজনের স্বর্ণলংকার হাতিয়ে নিয়ে কামরুজ্জামানের পরিবারের কাছে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তালাকনামা পাঠিয়ে দেয় ওই স্কুল শিক্ষিকা হিরা খাতুন। পরে হিরা খাতুনের প্রতারণামূলক বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে কামরুজ্জামানের প্রতিকারের পূর্বেই হিরা খাতুন তাকে তালাক দেয়। ঘটনাটি স্থানীয় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ও তিনশত গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইলে হিরা খাতুন ও তার লোকজন তাদের হত্যার হুমকি প্রদান করেন। এছাড়া ২০১০ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির নাম করে হিরা খাতুন কামরুজ্জামানের কাছ থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা গ্রহণ করে। এই ২ লাখ টাকা পরে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও হিরা খাতুন এখন পর্যন্ত টাকা ফেরত দেয়নি।

এদিকে ভুক্তভোগী কামরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হিরা খাতুনের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছি। প্রশাসনের নিকট প্রতারক হিরা খাতুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

আরো পড়ুন: বিয়ের সাইটে নিজের ছবি আপ করা নিয়ে বলিউড নায়িকার কাণ্ড

পরে ভুক্তভোগী কামরুজ্জামানের মা মোছা. জায়েদা বেগম বাদী হয়ে ৪৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ, প্রতারণা ও ভয়ভীতির অভিযোগ এনে হিরা খাতুন ও তার ভাই-বোন এবং বাবাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষক হিরা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি কামরুজামানের দায়েরকৃত আরজিতে টাকা ও স্বর্ণালংকারের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে হিরা খাতুনের দ্বিতীয় বিয়ের সময় পূর্বের স্বামীর একটি সন্তান ছিল বলে স্বীকার করেন। 

ইত্তেফাক/বিএএফ