শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কম্পিউটার আরো কর্মোপযোগী করবেন যেভাবে

আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৩০

যদি আপনি বহুদিন একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে দেখবেন যে, কম্পিউটারটি প্রথম দিকে যেভাবে সচল ছিল বর্তমানে তার অবস্থা সেরকম নেই। বিশেষ করে ওই পিসিটির গতি দিন দিন ধীর হচ্ছে। যদি আপনি কয়েকটি বিষয় মেনে চলেন তাহলে পুরনো ওই পিসিটিতে আপনি পেতে পারেন আরো ভালো ফলাফল। পুরনো পিসিতে খানিকটা গতি সঞ্চার করার কিছু কৌশল তুলে ধরা হলো—

স্টার্টআপ হবে দ্রুত

যেকোনো কম্পিউটার স্টার্টআপের সময় ওই কম্পিউটারে যতগুলো সফটওয়্যার ইনস্টল করা থাকে তা একসঙ্গে রান করে। ফলে পিসিটি  সম্পূর্ণরূপে চালু হতে না হতেই গতির দিক থেকে ধীর হতে থাকে। এজন্য কম্পিউটার স্টার্টআপের সময় যত কম প্রোগ্রাম রান করানো যায়, ততই ওই কম্পিউটারে গতির জন্য শ্রেয়। হার্ডওয়্যারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যান্টিভাইরাসের মতো সফটওয়্যারগুলো পিসি চালু হওয়ার শুরু থেকেই রান করতে থাকে। এর পাশাপাশি কম্পিউটারে আরো অনেক সফওয়্যার ইনস্টল করা থাকে যা পিসি চালুর সঙ্গে সঙ্গে রান করতে থাকে।  এই ধরনের অবাঞ্ছিত সফটওয়্যারগুলো পিসির গতিকে টেনে ধরে অনেকটা। এ জন্য উইন্ডোজের রান কমান্ডে গিয়ে লিখতে হবে ‘msconfig’। সেখানকার উইন্ডোতে চলে আসবে স্টার্টআপে চালু হওয়া প্রোগ্রামের তালিকা। সেই তালিকা থেকে বেছে বেছে শুরুতেই দরকার এমন প্রোগ্রামগুলো বাদ দিয়ে বাকিগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে রাখুন। এতে করে আপনার ব্যবহূত পিসিটির স্টার্টআপ গতি আগের থেকে অনেক দ্রুত হবে।

 

অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার দূর করুন

একটি পিসি রান করার জন্য যে সফটওয়্যারগুলো প্রয়োজন হয় তা পিসি বিক্রেতারা ইনস্টল করে দিয়ে থাকে। সব সফটওয়্যার সবার প্রয়োজন নাও হতে পারে। যে সফটওয়্যারগুলো আপনার প্রয়োজন নেই তা যে শুধু আপনার পিসিকে ভারি করে দেবে তা নয়, এধরনের সফটওয়্যার স্টোরেজ দখল করার পাশাপাশি অনেক ধরনের ত্রুটি তৈরির জন্য যথেষ্ট হতে পারে। এজন্য অপ্রোয়জনীয় সফটওয়্যারগুলো চিহ্নিত করে বিদায় দিয়ে দেয়াটাই ভালো। সিসি ক্লিনার, পিসি ডিক্র্যাপিফায়ার, ড্রপইট প্রভৃতি সফটওয়্যারের মাধ্যমে এই কাজগুলো সহজেই করে ফেলতে পারবেন। এ ছাড়া পিসিতে ইন্সটল করা অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলোকেও আনইন্সটল করে ফেলুন।

হার্ডডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্ট করুন

হার্ডডিস্কে নিয়মিত যে তথ্যগুলো সংরক্ষণ করা হয় এবং ডিলিট করা হয় তার যাবতীয় তথ্য ওখানে থেকেই যায়। অর্থাত্ হার্ডডিস্ক থেকে কোনো তথ্য ডিলিট করলে তা হার্ডডিস্কে হাইড অবস্থাতে থেকেই যায়। পরবর্তীতে আবার কোনো তথ্য সংরক্ষণ করতে চাইলে তা আগের তথ্যের উপর ওভাররাইট হিসেবে কাজ করে। এভাবে  অনেকবার হতে থাকলে হার্ডডিস্কের সংরক্ষণ ক্ষমতা কমতে থাকে। হার্ডডিস্ক ভালো রাখতে বা হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখতে নিয়মিত হার্ডডিস্ককে ডিফ্র্যাগমেন্ট করা দরকার। উইন্ডোজের বিল্ট-ইন ডিফ্র্যাগমেন্টার ছাড়াও থার্ড-পার্টি সফটওয়্যার দিয়েও এ কাজ করতে পারেন। এতে হার্ডডিস্কের কর্মক্ষমতা অনেকটাই অক্ষুণ্ন থাকবে।

হার্ডওয়্যারও পরিষ্কার রাখুন

পিসি থেকে অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের জঞ্জাল দূর করাটা যেমন প্রয়োজনীয়, তেমনি পিসির হার্ডওয়্যারে ধূলো-ময়লা জমলে সেগুলোকেও দূর করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পিসি কেনার পর কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও পিসির কেসিংটি খোলা হয় না। এতে করে অনেক সময়ই কেসিংয়ের মধ্যে থাকা হার্ডওয়্যারগুলোতে ময়লার পুরু স্তর জমে যায়। ফলে প্রসেসর, র্যাম, গ্রাফিক্স কার্ড প্রভৃতি হার্ডওয়্যার পরিচালনার সময় অতিরিক্ত তাপ উত্পন্ন হতে পারে যা পিসির জন্য ক্ষতিকর। নিয়মিত পিসির হার্ডওয়্যারকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে তা হার্ডওয়্যারগুলোকে সঠিকভাবে চলতে সহায়তা করে।

নিয়মিত উইন্ডোজ ইনস্টল করুন

উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম দিন দিন নিজেই  নিজ থেকেই ধীর গতির হতে থাকে। তাই সফটওয়্যার বিষয়ক টিপসগুলো অনুসরণ করার পরও সন্তোষজনক ফলাফল না পেলে আপনার উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমটিকেই নতুন করে ইন্সটল করে নিন। এর আগে আপনার প্রয়োজনীয় সিস্টেম ডাটা বা হিস্টোরি সংরক্ষণ করতে ভুলবেন না। আর খুব ভালো হয় যদি গোটা হার্ডডিস্কের সকল ডাটার ব্যাকআপ অন্য কোথাও রেখে গোটা হার্ডডিস্ককে ফরম্যাট করে নতুন পার্টিশন দিয়ে উইন্ডোজ ইন্সটল করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে পিসির গতিতে নিজেই চমকে যাবেন আশা করা যায়।

এসএসডি ব্যবহার করুন

হার্ডডিস্কের তুলনায় সলিড স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি) অনেক বেশি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে থাকে। তাই হার্ডডিস্কের বদলে এসএসডি ব্যবহার করতে পারলে তথ্য স্থানান্তরসহ পিসির বিভিন্ন কাজেই বাড়তি গতি পাবেন। এসএসডির দাম অবশ্য তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। তবে হার্ডডিস্কের তুলনায় এর স্থায়িত্বও বেশি। তাই গতির সঙ্গে সঙ্গে তথ্যের সুরক্ষাতেও এসএসডি স্টোরেজ আপনার সহায় হয়ে উঠতে পারে।

নতুন গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করুন

পিসিতে সাধারণ কাজগুলো ঠিকঠাকমতো করতে পারলেও হয়ত দেখা যাচ্ছে, এইচডি ভিডিও দেখতে গিয়ে বা গেম খেলতে গিয়ে বিরক্তির চূড়ান্তে পৌঁছে যেতে হচ্ছে। গোটা পিসির বদলে একটি আপগ্রেডেড গ্রাফিক্স কার্ডই এক্ষেত্রে সমাধান হয়ে আসতে পারে। আসলে হাই-এন্ড সব গেম কিংবা এইচডি ভিডিওগুলোর জন্য গ্রাফিক্স কার্ডের ব্যাকআপ গুরুত্বপূর্ণ। ডুয়াল কোর বা কোর টু ডুয়ো প্রসেসরের সঙ্গে ভালো একটি গ্রাফিক্স কার্ড পিসির পারফর্ম্যান্সকে অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে।

এই পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে আপনার পিসির পারফর্ম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, তা বলাই বাহুল্য। আশা করা যায়, এসব ধাপ আপনার পিসিকে আপনার সামনে নতুনরূপেই হাজির করতে সমর্থ হবে।