শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঘিওরে পাউবোর জায়গা দখল করে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি!

আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:২৪

মানিকগঞ্জের ঘিওরে বেদখল হয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। পাউবোর মালিকানাধীন জায়গা দখল করে কৃষি জমির মাটি ভেকু,  ড্রেজার দিয়ে কেটে বিভিন্ন জায়গা ভরাট ও ইট ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। বিক্রি করছেন বানিয়াজুরি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস, ড্রেজার মালিক মিরন মিয়াসহ ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতা— এমন অভিযোগ করেছেন এলাকার অনেকেই।

জানা যায়, উপজেলার বানিয়াজুরি ইউনিয়নের নয়াচর, তাড়াইল, কাকজোড় গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন একটি সরকারি বেড়ি বাঁধ রয়েছে। এসব এলাকায় কতিপয় চিহ্নিত ভূমিদখলদারের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী।

জানা গেছে, প্রভাবশালীরা লিজের নাম করে পাউবো’র ও পার্শ্ববর্তী কৃষকদের মালিকানাধীন জায়গায় জোরপূর্বক ভেকু ও ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার মাটি তুলে বিক্রি করছে। শুধু মাটি কেটেই ক্ষান্ত হচ্ছে না তারা, জোরপূর্বক জমির উপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দিয়ে ফসলও নষ্ট করে দিচ্ছে। প্রভাবশালীরা দখল করা জমির মাটি কেটে ৮/১০ ফুট গভীর গর্ত করছে। এতে পরিবেশের বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কৃষি ও ফসলি জমি। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় এভাবে সরকারি মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।

জানা যায়, উপজেলার বানিয়াজুরি ইউনিয়নের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে নয়াচর তাড়াইল হয়ে সরুপাই পর্যন্ত প্রায় ৭১.২৬ একর ভূমি বেড়িবাঁধের প্রয়োজনে পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তিতে বাঁধের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জমিগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। এসুযোগে প্রভাবশালীরা সেই জমি দখল করে ভেকু, ড্রেজার দিয়ে কেটে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ মাটি।

তবে ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস ও ড্রেজার মালিক মিরন মিয়া তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা জমির মালিকদের কাছ থেকে মাটি কিনে নিয়েই বিক্রি করছি। এখন আপাতত তা বন্ধ আছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে ম্যানেজ করেই মাটি কাটবো। আর আমরা সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য বার হাজার টাকা দিয়েছি।’ ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, খুব দ্রুত ভূমি দখলদার ও অবৈধ মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মওলা মোঃ মেহেদী হাসান জানান, পাউবোর আওতাধীন জায়গার মাটি ভেকু ও ড্রেজার দিয়ে কেটে বিক্রি করার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।