এক দিনে ফিরল হাজার কোটি টাকা
ইত্তেফাক রিপোর্ট
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে এক দিনেই প্রায় হাজার কোটি টাকা ফিরে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বড় অঙ্কের অর্থ ফিরে আসার দিনে ডিএসই এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের উত্থান হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকল শেয়ারবাজার।
অবশ্য এর আগে টানা পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। যে কোনো মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম) উঠে যেতে পারে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে ঐ দরপতন দেখা দেয়। তবে গত সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম জানান, আপাতত ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। চেয়ারম্যানের এমন বার্তা আসার পরেই বাজার ঘুরে দাঁড়ায়। গত সোমবারের ধারাবাহিকতায় গতকালও শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯১৩ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ঐ পরিমাণ বেড়েছে।
ডিএসইর এক সদস্য বলেন, কয়েক দিন ধরে বাজারে গুঞ্জন ছিল ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়। যার কারণে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। তবে গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান ক্লিয়ার করেছেন আপাতত ফ্লোর প্রাইস উঠানো হবে না। যার ইতিবাচক প্রভাব বাজারেও পড়েছে। প্রায় হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন বাড়ার দিনে গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৯৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৭টির। আর ১৭৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ১১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ১১ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, মুন্নু সিরামিক, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৪ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৫টির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১০১টির।