শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শোকার্ত তার জন্মভিটা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়ার উত্তর যদুরহাটি পঞ্চায়েতের মামুদপুরের বাসিন্দারা। এখানেই ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
শুক্রবার এক শোকবার্তায় মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামানের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, প্যারিস, নর্থ ক্যারোলিনাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অধ্যাপনা করেছেন। একুশে পদক, পদ্মভূষণ, আনন্দ পুরস্কারসহ অজস্র সম্মানে তিনি ভূষিত হয়েছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে তাকে জগত্তারিনী পদক প্রদান করে। তার মৃত্যুতে শিক্ষা ও সাহিত্যজগতে বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হলো। আমি আনিসুজ্জামানের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এদিকে ড. আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর সংবাদে শোকস্তব্ধ বসিরহাটের বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই শহরের বহু মানুষ আনিসুজ্জামানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া ব্লকের উত্তর যদুরহাটি পঞ্চায়েতের মামুদপুরে আনিসুজ্জামানের পৈতৃক ভিটা। তার পিতামহ শেখ আবদুর রহিম ছিলেন টাকি সরকারি বিদ্যালয়ের ছাত্র। রহিম সাহেব ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক। বাংলা ভাষায় সরকারি কাজ চালুর জন্য তার লড়াই ছিল স্মরণীয়। ১৯৪৫ সালে পিতামহের মৃত্যুর পর বেশ কিছুকাল তারা বাদুড়িয়ার গ্রামে কাটিয়েছেন। শেষবার আনিসুজ্জামান বসিরহাটে এসেছিলেন ১৯৬৯ সালে।
বাদুড়িয়ার বিধায়ক কাজি আবদুর রহিম দিলু বলেন, ‘বাদুড়িয়ার মাথায় একটি গর্বের পালক ছিলেন আনিসুজ্জামান। বাংলা ভাষা চর্চার অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’? বিশিষ্ট কবি, স্বদেশ পত্রিকার সম্পাদক পান্নালাল মল্লিক বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই তিনি বসিরহাট, বাদুড়িয়ায় এসেছেন পারিবারিক সূত্র ধরেই। এমন একজন মানুষ, যার সঙ্গে এই শহরের নাড়ির যোগ ছিল।’? টাকির বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজকর্মী দীপক বসু জানিয়েছেন, ‘টাকি রাষ্ট্রীয় জেলা গ্রন্থাগারের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে স্মারক পত্রিকার জন্য শুভেচ্ছাবার্তা নিতে ওনার ঢাকার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সে সময় কলকাতার দুর্গাপুজো, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক গল্প হয়েছিল। আক্ষেপ, টাকির গ্রন্থাগারের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে স্মারক পত্রিকাটি বরেণ্য মানুষটির হাতে তুলে দেওয়া হলো না।’