বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মধ্য ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়ার প্রথম মসজিদ

আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:৫৪

  রাকিব হাসান

 

প্রায় ৭ হাজার ৮২৭.৪ বর্গমাইল আয়তন বিশিষ্ট মধ্য ইউরোপের ছোট্ট দেশ স্লোভেনিয়াতে জনসংখ্যা ২০ লাখের কাছাকাছি; যাদের মধ্যে ৩ দশমিক ৭ শতাংশের মতো মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। ক্যাথলিক খ্রিষ্টানিটির পর যা দেশটির সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের ধর্ম। তবে এ সব মুসলিম জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ সদস্যই মূলত বসনিয়ান ও আলবেনিয়ান বংশোদ্ভূত। যদিও দেশটির দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম ইসলাম, কিন্তু এত দিন দেশটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মসজিদ ছিল না।

স্লোভেনিয়াতে প্রথম মসজিদ নির্মাণের কথা জানা যায় ১৯১৬ সালে এবং সে সময় দেশটি অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান শাসনের অধীনে ছিল। এটি ‘লগ পড ম্যানগারটোম মসজিদ’ নামে পরিচিত। তবে এর চার বছর পর অর্থাত্ ১৯২০ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এ মসজিদটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এরপর ১৯৬৯ সালে প্রথম স্লোভেনিয়ার তত্কালীন সময়ের স্থানীয় সরকারকে অনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হয় দেশটির রাজধানী লুবলিয়ানাতে একটি মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার জন্য যুগোস্লাভিয়ার অন্যান্য অংশ থেকে স্লোভেনিয়াতে আসা মুসলমাদের পক্ষ থেকে। কিন্তু স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের বিরোধের মুখে সে প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়ার পতন ঘটলে এবং যুগোস্লাভিয়া থেকে আলাদা হয়ে নতুন একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর নতুন রাষ্ট্রেও একটি মসজিদ বানানোর অনুমতি চেয়ে দেশটির সরকারের কাছে একটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। কিন্তু স্লোভেনিয়ার সরকার সে সময় তাদের জাতীয়তাবাদের সঙ্গে সংঘর্ষিকতার কথা বলে মসজিদ নির্মাণের অনুমতি প্রদান থেকে বিরত থাকে।

২০১৩ সালে এ মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হলেও ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে এসে এ নির্মাণকাজ শেষ হয়। মাঝখানে ২০১৭ সালে এসে আবারও মসজিদের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে এ মসজিদটি নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মসজিদটি নির্মাণ করতে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ইউরোর খরচ হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২৮ মিলিয়ন ইউরোর মতো খরচ কাতার একাই বহন করেছে। মসজিদের ভেতরের নকশা করা হয়েছে হয়েছে তুরস্ক অথবা উসমানী খিলাফতের এক সময়কার রাজধানী হিসেবে পরিচিত ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত সুলতান আহমেদ মসজিদের অনুসরণে। একসঙ্গে ১৪০০ মানুষ এ মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

স্লোভেনিয়ান টাইমস পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে স্লোভেনিয়ার গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে পরিচিত নেদজাদ গ্রাবুস বলেছেন যে, এ মসজিদটি স্লোভেনিয়াতে বসবাসরত মুসলমানদের জীবনে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে এবং এখানে বসবাসরত মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষের ধর্ম চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

lলেখক :শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন