শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন

ঝুঁকিপূর্ণ ৫০ ভোটকেন্দ্র

আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:১৯

ঢাকার দুই সিটির ৫০টি ভোটকেন্দ্র নিয়ে চিন্তিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯২টি ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এই ৯২টি ওয়ার্ডের ৫০টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে পুলিশ। আবার এর মধ্যে ১৮টি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৪০ হাজার সদস্য ভোটের সময় মাঠে থাকবে। কেন্দ্রভিত্তিক সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। গোয়েন্দাদের রিপোর্টেও বলা হয়েছে—মোট ১৮টি কেন্দ্র খুব ঝুঁকিপূর্ণ। সব সময়ই তারা সতর্ক আছেন, কোনো সমস্যা থাকলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় ঝুঁকিপূর্ণ ৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৩টি আর দক্ষিণ সিটিতে রয়েছে ২৭টি কেন্দ্র। কেন্দ্রগুলোর ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা, সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রভাব, দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থীদের ক্ষোভ, বিরোধী দলের শক্ত প্রার্থী থাকা ও এলাকাগুলো ক্রাইম জোন হওয়ার কারণে কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। আগের দায়িত্ব পালন করা কাউন্সিলর যারা দলের মনোনয়ন পাননি তারাও ভোটে দাঁড়িয়েছেন। অনেক বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ভোটের মাঠে জোর প্রচারণা চলছে। কিছুদিন আগে ক্যাসিনো ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। এতে অবৈধ উপায়ে যারা অর্থ আয় করেছেন তারা অনেকটা ‘দৌড়ের’ ওপর আছেন। তাদের পক্ষের এবং বিপক্ষের লোকজন সক্রিয় আছে এলাকায়। এতে ঐ সব ভোটকেন্দ্রের এলাকাগুলোতে দলাদলির প্রভাবে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থা নির্বাচন কমিশনের কাছে ৫০টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা জমা দিয়েছে। এই তালিকায় ১৮টি কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য : বাড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাড্ডা হাইস্কুল, তেজগাঁও কলেজ, সেন্ট্রাল রোডের আইডিয়াল কলেজ, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, মিরপুর, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ, আল হেরা কলেজ, বাড্ডা কলেজ, নিকুঞ্জ মডেল কলেজ, পল্লবী কলেজ, রামপুরা একরামুন্নেছা ডিগ্রি কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, শের-ই-বাংলা আদর্শ মহিলা কলেজ, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ, তেজগাঁও মহিলা কলেজ, উত্তরা মডেল টাউন স্কুল, নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ, কল্যাণপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরার ঢাকা ওমেন কলেজ, খিলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, নটর ডেম কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা সিটি কলেজ, ওয়ারীর সলিমুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ, মতিঝিল মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, আবুজর গিফারী ইউনিভার্সিটি কলেজ, মালিবাগ অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আরামবাগ গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, শহীদুল্লাহ কলেজ, বকশীবাজার, হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ, পুরানা পল্টন গার্লস কলেজ, আর কে চৌধুরী কলেজ, সায়েদাবাদ, দনিয়া কলেজ, ঢাকা সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, শহীদবাগ, ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও মডেল কলেজ, মেহেরুন্নেছা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মির্জা আব্বাস ওমেন্স ডিগ্রি কলেজ, শাহজাহানপুর, শাহ আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শান্তিবাগ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেখ বোরহান উদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, টি অ্যান্ড টি কলেজ, মতিঝিল ও বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ।

এসব ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগাম সতর্কতা হিসেবে সংশ্লিষ্ট থানা ও পুলিশ ফাঁড়িগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভোটকেন্দ্রগুলো ও আশপাশের এলাকায় থানা পুলিশের মোবাইল পার্টি, পিকেট পার্টি, হাঁটা পার্টি, গাড়ি টহল পার্টিকে বেশি সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। বিট পুলিশিংকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের আশপাশে বসাতে বলা হয়েছে চেকপোস্ট। এছাড়াও ভোটের কয়েক দিন আগে থেকে ভোটকেন্দ্রের আশপাশের এলাকাগুলোতে দুর্বৃত্তদের দমনের জন্য বাসাবাড়িগুলোতে ব্লক রেইড দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।