বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

টেস্টের কাঠামোয় পরিবর্তন চান কোচ

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:২৩

ইন্দোর টেস্টের প্রথম দুই দিনে খুব কঠিন অভিজ্ঞতা হলো বাংলাদেশের। প্রথম দিনে ভারতীয় বোলারদের তোপে অল্প রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। দ্বিতীয় দিনে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের রানের মিছিলে চাপা পড়তে হয়েছে সফরকারীদের। গতকাল দ্বিতীয় দিন শেষে ৩৪৩ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ইন্দোরে তাই ভালো কিছুর আশা করাটা এখন দুরাশাই হয়ে দাঁড়িয়েছে।


ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই আলোচনা চলছিল, বাংলাদেশের একাদশে কেন নেই তিন পেসার? কেন সাত ব্যাটসম্যান খেলানোর পদ্ধতিতে হাঁটছে বাংলাদেশ? গতকাল দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। প্রোটিয়া এই কোচ সরাসরি বলেছেন, টেস্ট দলের কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার নিয়ে হলেও পেসারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তবে ইন্দোরের উইকেট পড়তে ভুল করেননি বলে দাবি করেছেন ডমিঙ্গো।


 
টেস্ট দলের কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হবে জানিয়ে বাংলাদেশের কোচ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘দলের কাঠামোতে পরিবর্তন দরকার। দুই পেসার নিয়ে খেলাটা কঠিন। আমাদের তৃতীয় পেসার খুঁজে পেতে হবে, যে ব্যাটিং পারে। এখানে সাইফউদ্দিন আছে, কিন্তু সে ইনজুরির সঙ্গে লড়ছে। দলের কাঠামোর দিকে নজর দিতে হবে। আমার মনে হয় অনেক দল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভালো উইকেট গড়বে, যেটা বেশি স্পিন করবে না। আমাদের একজন পেসার দরকার, যে সাত-আটে ব্যাট করতে পারবে।’

সাত ব্যাটসম্যান, চার বোলার নিয়ে ইন্দোরে খেলছে বাংলাদেশ। দলের কাঠামোতে পরিবর্তন না আনলে ফলাফল এমনই হবে। গতকাল ডমিঙ্গো বলেছেন, ‘এখানে কোনো সন্দেহ নেই যে দলের কাঠামোতে পরিবর্তন দরকার। তা না হলে ফলাফল একই রকম হবে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনার জন্য নির্বাচকদের সঙ্গে আমার বসতে হবে।’

তৃতীয় পেসারের অভাবটা ঠিকই টের পেয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল দিনভর এক প্রান্তে রাহী চাপ প্রয়োগ করেছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ওপর। অন্য প্রান্তে নিয়মিত রান দিয়ে গেছেন এবাদত হোসেন। বল হাতে অকার্যকর ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুলও।

বাংলাদেশের কোচ বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবেই তিন পেসার খেলানোর বিষয়টি বিবেচনা করতাম, কিন্তু আমাদের ব্যাটিং লাইনআপ হালকা হয়ে যেত। আমাদের সম্ভবত তিন পেসার খেলানো উচিত ছিল, কিন্তু এই ফর্মুলা আমাদের জন্য কাজ করেনি।’

ইন্দোরের উইকেট পড়তে অবশ্য ভুল করেননি বলেই দাবি করলেন ডমিঙ্গো। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘কোনোভাবেই না। আপনি যদি উইকেটের দিকে তাকান, ম্যাচ যত এগিয়ে যাবে, উইকেটে ব্যাটিং তত কঠিন হবে। আমরা হয়তো ম্যাচে থাকতাম, যদি আমরা প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান করতাম। আমাদের সুযোগ ছিল। আমাদের মিডল ও লোয়ার অর্ডার কালকে (বৃহস্পতিবার) ভেঙে পড়েছিল।’

বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের সবেধন নীলমণি রাহী। ডানহাতি এই পেসার ৪ উইকেট নিয়েছেন এবং শুরুর চারটিই তার দখলে। রোহিত শর্মা, কোহলি, পূজারা, রাহানেকে ফেরত পাঠিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার।

মিরাজ-এবাদত একটি করে উইকেট পেলেও তাদের বোলিং ছিল এলোমেলো। রাহীর প্রশংসা করে গতকাল বাংলাদেশের কোচ বলেছেন, ‘আমার মনে হয় সে খুব ভালো টেস্ট বোলার। তার লাইন-লেন্থে ধারাবাহিকতা আছে। সে এই ম্যাচে খুব ভালো বোলিং করেছে। আমি কয়েকটা খবর পড়েছি, যেখানে লেখা হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটে সে খুব বেশি উইকেট পায় না। কিন্তু আমরা মনে করি সে আমাদের শীর্ষ টেস্ট বোলার। তার বড়ো দায়িত্ব আছে। তাকে অবশ্যই সমর্থন দেওয়া প্রয়োজন।’

স্কোর কার্ড

বাংলাদেশ-ভারত

ইন্দোর টেস্ট

বাংলাদেশ-১ম ইনিংস: ৫৮.৩ ওভারে ১৫০/১০

ভারত-১ম ইনিংস :

ব্যাটসম্যান রান বল চার ছয়

আগারওয়াল ক রাহি ব মিরাজ ২৪৩ ৩৩০ ২৮ ৮

রোহিত ক লিটন ব রাহি ৬ ১৪ ১ ০

পুজারা ক সাইফ ব রাহি ৫৪ ৭২ ৯ ০

কোহলি এলবিডব্লু রাহি ০ ২ ০ ০

রাহানে ক তাইজুল ব রাহি ৮০ ১৭২ ৯ ০

জাদেজা ব্যাটিং ৬০ ৭৬ ৬ ০

সাহা ব এবাদত ১২ ১১ ২ ০

যাদব ব্যাটিং ২৫ ১০ ১ ৩

অতিরিক্ত (লেবা-১, নো-৩, ও-৩) ৭

মোট :১১৪ ওভারে ৪৯৩/৬

বোলিং : এবাদত ৩১-৫-১১৫-১, রাহি ২৫-৩-১০৮-৪, তাইজুল ২৮-৪-১২৫-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-২৪-০, মিরাজ ২৭-০-১২৫-১।

উইকেট পতন :১৪-১ (রোহিত), ১০৫-২ (পুজারা), ১১৯-৩ (বিরাট), ৩০৯-৪ (আজিঙ্কা), ৪৩২-৫ (মায়াঙ্ক), ৪৫৪-৬ (সাহা)